শুদ্ধতম নব কবি রূপে আবির্ভাব ঘটেছিল সেদিন আমার। প্রথম বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছিল ঈশান কোণে জমা কালো মেঘ। তোমাকে নিয়েই প্রথম লিখেছিলাম, নস্টালজিক কবিতা। একে একে লিখেছিলাম, দুশো বায়ান্নটা অভিন্ন চিঠি। যার কোনোটাই পোস্ট অফিস অবধি যেতে পারেনি।
আমার কাছে ছোটখাটো বিষয় গুলোতেও ছিল দারুন পাগলামী, আমার পাগামীরা প্রায়ই যেতো ইচ্ছের মিছিলে তোমাকে পাওয়ার জন্য।
মানি প্ল্যান্টের মতো দেয়াল ঘেঁষে আঁকড়ে উঠেছিল সে প্রেম আমার করিডোরে। গন্ধরাজের মতো মুগ্ধকর গন্ধের ফুটে ছিল অকৃত্রিম স্বপ্ন জীবন নিয়ে।
স্বপ্ন জয়ের দারুন প্রচেষ্টাও ছিল। অথচ তুমি তো লেখা ছিলে অন্যের নামের পাশে। হয়তো আমার নামের পাশে তুমি নামটা শূন্যস্থান হয়ে থাকবে। হেরে গেছিল নিয়তির কাছে কিছু স্বপ্ন। কিছু ইচ্ছেরা ধুলো চাপা পড়ে ছিল নিতান্তই ব্যস্ত শহরের বুকে।
এক স্টেশনের জনমানব শূন্য প্ল্যাটফর্মে আমি নিঃসঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। তুমি তুমুল বেগে ছোটা শেষ ট্রেনে ফিরেছ স্বপ্নের শহরে। রেখে গেছো এক অতীতে ভরা স্যুটকেস।
হয়তো তুমি নিত্য নতুন চিঠি লেখো, গান গাও প্রাণ ভরে । আমি অতীত নামক অদ্ভুত খাঁচায় বন্দী হয়ে ফেলে আসা কাজলের দিন রাত্রি নিয়ে বেঁচে আছি। আমি অদ্ভুত অন্ধকার টানেলের শেষ প্রান্ত খুঁজে চলেছি...!
জানো, রং তুলির আঁচড়ে একসময় যে মুক্ত নীল আকাশের বুকে স্বপ্ন আঁকতাম। এখন ওই রং তুলির হাতে পায় ধরেও কিছুই আসে না আঁকব বলে। কালো রঙের সমাহার চারদিকে। শুভ্রতা বিধায় নিয়েছে শরতের সাথে।
একদিন যে হৃদয়ের মাঝে সবুজ পাহাড় সমান বিশ্বাস ছিল, সে হৃদয় এখন ক্যান্সারের জীবাণুর দখলে । অনাগত শিশুর মৃত্যুর মতো আমার সব ইচ্ছেরা চিরো বিদায় নিলো। তারপর আর রঙিন ঘুড়ি উড়ানো হয়নি নীল আকাশ আর শুভ্র মেঘের মাঝে।
শ্রাবণের স্নিগ্ধ বৃষ্টিতে আর ভিজতে দেইনি তারপর থেকে। বসন্তে আর কোকিল ডাকেনি। শুধু গ্রীষ্ম এসেছে কাঠফাটা রোদ্দুর নিয়ে। প্রেমের বৃষ্টি বিদায় নিয়েছে ধরা থেকে.....
তাই বারবার জীবনানন্দের একটা কথা মনে পড়ে,
" পৃথিবী একবার পায় তারে,
পায় নাকো আর ...!"


No comments:
Post a Comment